বয়ঃসন্ধিকালে সন্তানের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনে অভিভাবকদের করণীয়
বয়ঃসন্ধিতে বাবা-মায়ের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করতে গেলে একটি বিষয় স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন যে দুই ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের ভূমিকা কিছুটা ভিন্ন হয়, এবং তা হওয়াটাই স্বাভাবিক। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লক্ষ্য করা যায় মেয়েরা বাবার তুলনায় মায়ের সাথে বেশি বন্ধুত্বপূর্ণ হয়। আবার ছেলেদের ক্ষেত্রেও বয়ঃসন্ধিতে মায়ের সাথে সখ্যতা তুলনামূলক বেশি দেখা যায়৷ নিচে বয়ঃসন্ধির সময় সন্তানের সাধারণ সমস্যাগুলো এবং অভিভাবকদের করণীয় নিয়ে আলোচনা করা হলো:
অভিভাবকদের করণীয়
১. খোলা মনের আলোচনা করুন
- সন্তানের সাথে খোলামেলা সম্পর্ক গড়ে তুলুন।
- শরীরের পরিবর্তন ও যৌন শিক্ষা নিয়ে স্বাভাবিকভাবে কথা বলুন।
- তাদের যেকোনো প্রশ্নের বিজ্ঞানসম্মত ও সঠিক উত্তর দিন।
২. ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করুন
- পরিবারের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ রাখুন।
- সন্তানকে বোঝান যে তারা তাদের অনুভূতি বা সমস্যাগুলো মুক্তভাবে শেয়ার করতে পারে।
বয়স অনুযায়ী শিশুর খাবার তালিকা
৩. আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করুন
- শরীর বা চেহারা নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করবেন না।
- তাদের ভালো কাজগুলোকে প্রশংসা করুন এবং ছোটখাটো ব্যর্থতায় সান্ত্বনা দিন।
৪. প্রযুক্তি ও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ
- সন্তানের ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ওপর নজর রাখুন।
- অনলাইনে কীভাবে নিরাপদ থাকতে হয় তা শেখান।
৫. যৌন শিক্ষা দিন
- তাদের বয়স অনুযায়ী যৌন শিক্ষার গুরুত্ব বুঝান।
- অবাঞ্ছিত প্রভাব এড়াতে সঠিক তথ্য দিন।
৬. সময় দিন ও শুনুন
- সন্তানের সাথে সময় কাটান এবং তাদের অনুভূতি শুনুন।
- তাদের জীবনের ছোটখাটো ঘটনা জানার চেষ্টা করুন।
৭. স্বাস্থ্যকর অভ্যাস শেখান
- সুষম খাদ্য, পর্যাপ্ত ঘুম ও নিয়মিত ব্যায়ামের গুরুত্ব শেখান।
- ব্রণ বা ত্বকের সমস্যার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
বয়ঃসন্ধি বা কিশোর বয়স ছেলেদের সাধারণ সমস্যাগুলির
৮. বন্ধুত্ব ও সামাজিক সম্পর্ক নিয়ে সচেতন করুন
- ভালো বন্ধুত্ব গড়ার পরামর্শ দিন।
- ভুল পথে গেলে কেমন সমস্যা হতে পারে তা তাদের বোঝান।
৯. পেশা ও পড়াশোনার দিকনির্দেশনা দিন
- তাদের আগ্রহ ও দক্ষতা অনুযায়ী পড়াশোনা এবং পেশার দিকনির্দেশনা দিন।
- চাপ না দিয়ে তাদের নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহিত করুন।
১০. পেশাদার সহায়তা প্রয়োজন হলে নিন
- সন্তানের মধ্যে কোনো দীর্ঘমেয়াদী মানসিক চাপ বা আচরণগত পরিবর্তন দেখলে কাউন্সেলর বা মনোবিজ্ঞানীর সাহায্য নিন।
অভিভাবকদের জন্য পরামর্শ
- ধৈর্যশীল ও ইতিবাচক থাকুন।
- সন্তানের প্রতি কোনো সময় কঠোর বা অবহেলাপূর্ণ আচরণ করবেন না।
- মনে রাখবেন, বয়ঃসন্ধির সময় তারা নিজেদের খুঁজে পাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। তাদের পাশে থাকা ও সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়াই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
Tags
স্বাস্থ্য বিষয়