বয়স অনুযায়ী শিশুর খাবার তালিকা
বয়স অনুযায়ী শিশুর খাবার তালিকা দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, কারণ শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি নির্ভর করে সঠিক পুষ্টির উপর। নিচে বয়স অনুযায়ী শিশুর খাবারের তালিকা দেওয়া হলো:
০ থেকে ৬ মাস
- কেবল বুকের দুধ: শিশুর জীবনের প্রথম ৬ মাস কেবলমাত্র মায়ের বুকের দুধই দেওয়া উচিত। এতে শিশুর সকল প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান থাকে।
- যদি কোন কারণে বুকের দুধ দেওয়া সম্ভব না হয়, তাহলে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী ফর্মুলা মিল্ক দিতে পারেন।
৬ থেকে ৮ মাস
এ সময় শিশুকে বুকের দুধের পাশাপাশি নতুন খাবার পরিচয় করানো যায়:
- মসৃণ খাবার: সেদ্ধ ও পেস্ট করা চাল, ডাল, সবজি (মিষ্টি আলু, গাজর), সেদ্ধ ফল (কলা, আপেল), সেমাই, চালের গুঁড়া ইত্যাদি।
- নতুন খাবারের মাঝে ধীরে ধীরে অভ্যস্ত করানো: দিনে ২-৩ বার সলিড খাবার দেওয়া যেতে পারে।
৮ থেকে ১০ মাস
শিশুর খাবারে আরও বৈচিত্র্য আনতে পারেন:
- মাংস ও ডিম: সেদ্ধ ডিম, মুরগির মাংস (মসৃণ করে গুঁড়া করা), মাছের পাতলা অংশ (কাঁটা ছাড়া), নরম করে রান্না করা সবজি।
- ভাত-ডাল: নরম ভাত বা খিচুড়ি, নরম করে রান্না করা ডাল।
- দিনে ৩ বার সলিড খাবার এবং ১-২ বার স্ন্যাক্স ( জলখাবার )।
১০ থেকে ১২ মাস
- পরিবারের খাবারের সাথে পরিচয়: শিশুকে এখন ধীরে ধীরে পরিবারের অন্যান্য খাবার খেতে দেওয়া যেতে পারে। তবে খাবার খুব নরম ও মশলাবিহীন রাখতে হবে।
- ফিঙ্গার ফুডস: ছোট ছোট টুকরা করা রুটি, নরম পাস্তা, সেদ্ধ করা সবজি বা ফল।
- বিভিন্ন শস্যদানা: দানাশস্য, ওটমিল, নরম চিড়া।
১ বছর ও তার বেশি বয়স
- বুকের দুধের পাশাপাশি স্বাভাবিক খাবার: ১ বছরের পর থেকে শিশুকে পরিবারের অন্যান্য খাবার দেওয়া যায়। তবে খাবারের মশলা কম রাখতে হবে।
- দুগ্ধজাত খাবার: দুধ, দই, পনির ইত্যাদি।
- প্রোটিন: মাছ, মুরগি, ডিম, ডাল, বাদাম।
- ফল ও সবজি: প্রতিদিন নানা রকম ফল এবং শাকসবজি খেতে দেওয়া।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস:
- খাবার ধীরে ধীরে পরিচয় করান এবং দেখুন কোন খাবারে শিশুর এলার্জি হচ্ছে কিনা।
- প্রচুর পানি খাওয়ান।
- খুব বেশি মশলাযুক্ত, চিনি ও লবণযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
- খাবার পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর হতে হবে।
শিশুর বয়স অনুযায়ী সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করা তার সঠিক শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সহায়তা করবে।