এনগেজমেন্ট রিং খুলে ফেললে কি ইসলাম ically গুনাহ হবে? জেনে নিন বিয়ের আগে কী করলে ভুল নয়!
ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে, বিয়ের আগে আংটি (এংগেজমেন্ট রিং) পরা বা খুলে ফেলা ধর্মীয় দিক থেকে বাধ্যতামূলক কোনো বিষয় নয়। এটি মূলত একটি সাংস্কৃতিক বা সামাজিক রীতি, ইসলামী বিধানের অংশ নয়।
তবে নিচের বিষয়গুলো জানা গুরুত্বপূর্ণ:
-
বিয়ের আগে সম্পর্কের সীমা: ইসলাম বিয়ের আগেই কোনো রকম ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বা প্রতিশ্রুতি বিনিময়কে নিরুৎসাহিত করে, যদি তা শরিয়তের সীমার মধ্যে না থাকে। তাই আংটি দেওয়া-নেওয়ার সাথে যদি কোনো রকম 'প্রেমিক-প্রেমিকা' ধরনের সম্পর্ক গড়ে ওঠে, তা হলে সেটি ইসলামী দৃষ্টিতে প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।
-
আংটি খুলে ফেলা: যদি কোনো কারণে এনগেজমেন্ট ভেঙে যায় বা কেউ আংটি খুলে ফেলে, এতে ইসলামী দৃষ্টিতে কোনো গোনাহ নেই। কারণ এটি বিয়ের অংশ নয়, বরং সামাজিক একটি রীতি মাত্র।
-
বিয়ে না হলে: এনগেজমেন্ট করার পরও বিয়ে না হলে উভয় পক্ষের কারো প্রতি ধর্মীয় কোনো বাধ্যবাধকতা থাকে না, যদি সম্পর্ক শরিয়ত অনুযায়ী সীমার মধ্যে রাখা হয়।
সুতরাং, কেউ এনগেজমেন্ট রিং খুলে ফেললে ইসলামically কোনো সমস্যা নেই, যতক্ষণ পর্যন্ত এর পেছনে অন্য কোনো অনৈতিক উদ্দেশ্য বা কাজ জড়িত না থাকে।
আরো পড়ুন:
ইসলামে ফরজ গোসলের বিস্তারিত নিয়ম এবং পদ্ধতি সম্পর্কে যা বলা হয়েছে
ইসলামে সাতটি অভ্যাস ত্যাগ করলে সারা জীবন চেহারা সুন্দর ও যৌবন ঠিক থাকবে
আপনি এনগেজমেন্ট বা বিয়ে সম্পর্কে কী জানতে চান—ইসলামী দৃষ্টিকোণ, প্রক্রিয়া, দোআ, বা কোনো নির্দিষ্ট সমস্যা নিয়ে? নিচে কয়েকটি সাধারণ বিষয় দিলাম, আপনি চাইলে যেকোনো একটির ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে পারেন:
-
ইসলামে এনগেজমেন্ট (বাগদান) এর নিয়ম ও শর্ত
-
বিয়ে ঠিক করার আগে কাকে দেখা ও জানার অনুমতি আছে?
-
মাহর (মোহরানা) সংক্রান্ত বিধান
-
নিকাহ বা আকদে ইসলামী শর্ত
-
দোআ বা আমল: ভালো বিয়ের জন্য দোআ
-
বিয়ের পর স্ত্রীর অধিকার ও স্বামীর দায়িত্ব
১. পাত্র-পাত্রী দেখা ও যাচাই করা
-
ইসলাম পাত্র বা পাত্রীকে বিয়ের উদ্দেশ্যে একবার দেখা ও কথা বলার অনুমতি দেয়, তবে তা শরিয়তের সীমা অনুযায়ী হতে হবে—মাহরাম বা অভিভাবকের উপস্থিতিতে।
-
উদ্দেশ্য: চরিত্র, দ্বীনদারি ও পারস্পরিক বোঝাপড়া যাচাই করা।
২. দ্বীনদারি প্রাধান্য দেওয়া
-
হাদীসে এসেছে:
“তুমি নারীকে চারটি বিষয়ের ভিত্তিতে বিয়ে করো: তার অর্থ, বংশ, সৌন্দর্য এবং দ্বীন। তবে তুমি দ্বীনদার নারীকে বেছে নাও—তাহলেই তুমি সফল হবে।”
(বুখারি ও মুসলিম)
৩. বাগদান (এনগেজমেন্ট)
-
এটি সামাজিক রীতি, ইসলামে সরাসরি বাধ্যতামূলক নয়।
-
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেওয়া যায়, তবে:
-
বিয়ের আগে প্রেম বা একান্তে মেলামেশা নিষিদ্ধ।
-
মোবাইলে কথা বা দেখা-সাক্ষাৎ করা হলে তা অবশ্যই সীমার মধ্যে এবং প্রয়োজনীয় হতে হবে।
-
৪. মাহর/মোহর নির্ধারণ
-
বিয়ের সময় পাত্রকে পাত্রীকে একটি নির্ধারিত অর্থ বা উপহার দিতে হয়, যাকে মোহর বা মাহর বলে।
-
এটি নারীর অধিকার এবং স্বামীর জন্য ফরজ।
৫. নিকাহ (বিয়ে) সম্পাদন
-
ইসলামী বিয়েতে যা থাকা আবশ্যক:
-
দুই পক্ষের সম্মতি
-
উপযুক্ত অভিভাবক (ওয়ালি)
-
দুইজন সাক্ষী
-
মোহর নির্ধারণ
-
ইজাব-কবুল (প্রস্তাব ও গ্রহণ)
-
৬. দোআ ও ইস্তিখারা
-
ভালো পাত্র বা পাত্রী নির্বাচন এবং সঠিক সিদ্ধান্তের জন্য ইস্তিখারা নামাজ পড়া উত্তম। এটি আল্লাহর কাছে হেদায়েত চাওয়ার একটি উপায়।
আশা করি আপনার প্রশ্নের গোছানো একটা উত্তর খুঁজে পেয়েছেন ইসলাম সম্মত বিস্তারিত আরো পড়ুন:
আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার পরিণাম কোরআনে যা বলা হয়েছে
দাম্পত্য জীবনে সুখী থাকার উপায়: সম্পর্কের বন্ধন মজবুত করুন