ভাই-বোনের মধ্যে ঝগড়া বা মনোমালিন্য হলেও তা দ্রুত মিটিয়ে নেওয়ার নির্দেশ হয়েছে
ইসলামে ভাই-বোনের মধ্যে ঝগড়া বা মনোমালিন্য হলেও তা দ্রুত মিটিয়ে নেওয়ার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। শান্তি ও মৈত্রী বজায় রাখা, সম্পর্ককে সুদৃঢ় করা, এবং পরস্পরের প্রতি সহানুভূতি ও সমঝোতা প্রকাশ করা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। এই বিষয়ে কোরআন ও হাদিসে অনেক নির্দেশনা রয়েছে।
১. কোরআন থেকে শিক্ষা
কোরআনে মুসলমানদের পরস্পরের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং মনোমালিন্য দ্রুত মিটানোর জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে।
- সূরা আল-হুজুরাত (৪৯:১০):
"মুমিনরা একে অপরের ভাই। অতএব, তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করো। এবং আল্লাহকে ভয় করো, যেন তোমরা দয়া লাভ করতে পারো।"
এখানে বলা হয়েছে যে, যদি ভাই-বোনের মধ্যে কোনো অশান্তি বা বিরোধ হয়, তবে তা সমাধান করতে হবে। ইসলামে শান্তি ও মৈত্রী প্রতিষ্ঠা করা অপরিহার্য।
২. হাদিস থেকে শিক্ষা
প্রতিটি মুসলমানের জন্য একটি হাদিস রয়েছে, যা ভাই-বোন বা পরস্পরের মধ্যে ঝগড়া মিটানোর গুরুত্ব তুলে ধরে।
- ইমাম আহমদ (রহ.) বলেছেন:
"যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের সঙ্গে মিটমাট করবে এবং তাদের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে, আল্লাহ তার প্রতি রহমত বর্ধিত করবেন।" (বুখারি ও মুসলিম)
এখানে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে যে, সম্পর্কগুলো মিটিয়ে নেওয়া বা শান্তি প্রতিষ্ঠা করা আল্লাহর কাছেও এক প্রশংসিত কাজ।
আদর্শ পরিবার গঠনে আল কুরআনের ভূমিকা
৩. সমঝোতা ও ক্ষমা করা
ইসলামে পরস্পরের প্রতি সহানুভূতি ও ক্ষমা করার উপরও জোর দেওয়া হয়েছে।
- হাদিস:
"মুসলিমের জন্য এই কাজই শ্রেষ্ঠ যে, সে তার ভাইয়ের ভুল ক্ষমা করে দেয় এবং শান্তির পথে চলে যায়।" (তিরমিজি)
একজন মুসলমানের উচিত, পরস্পরের মধ্যে কোনো ভুল হলে তা ক্ষমা করে দিতে এবং ঝগড়া বন্ধ করে সম্পর্ককে সুদৃঢ় করতে।
৪. সালাম দেওয়া ও সমাধান খোঁজা
ভাই-বোনের মধ্যে মনোমালিন্য হলে, প্রথমে সালাম দেওয়া উচিত। সালাম শান্তির চিহ্ন এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর আশীর্বাদ লাভ করা যায়।
- হাদিস (মুসলিম):
"সালাম প্রচার করো, খাবার দাও এবং আত্মীয়দের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করো, তুমি জান্নাতে প্রবেশ করবে শান্তিপূর্ণভাবে।"
এছাড়া, যখন ঝগড়া বা মনোমালিন্য হবে, তখন উভয় পক্ষকে শান্তভাবে আলোচনা ও সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করা উচিত।
নারীর ডিজিটাল পর্দা ও পুরুষের স্বীয় পর্দায় উদাসীনতা
দুশ্চিন্তা দূর করার জন্য কোরআনে অনেক আয়াতে প্রশান্তির কথা বলেছেন
ইসলামে রক্তের সম্পর্ক বা আত্মীয়তার বন্ধন বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
৫. তওবা ও আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া
মনোমালিন্য বা ঝগড়ার পরে আল্লাহর কাছে তওবা করা এবং পারস্পরিক ভুলভ্রান্তির জন্য ক্ষমা চাওয়া ইসলামে একান্তভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
- হাদিস:
"যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সঙ্গে ঝগড়া করে, সে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে সে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করবে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন।"
ইসলামে ভাই-বোনের মধ্যে ঝগড়া বা মনোমালিন্য হলেও তা দ্রুত সমাধান করা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী, পরস্পরের প্রতি সহানুভূতি, ক্ষমা, এবং সঠিক আলোচনার মাধ্যমে সম্পর্ক ঠিক করা উচিত। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য পরস্পরের প্রতি সদয় ও মধুর আচরণই মূল পথ।