আলঝেইমার ডিমেনশিয়া থেকে বাঁচার উপায় 
আলঝেইমার ও ডিমেনশিয়ার মতো স্মৃতিভ্রংশ রোগ থেকে বাঁচার জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনধারা ও মানসিক ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ। কিছু গবেষণাভিত্তিক অভ্যাস রয়েছে, যা অনুসরণ করলে এই রোগের ঝুঁকি কমানো যেতে পারে।
নিচে আলঝেইমার ও ডিমেনশিয়া থেকে বাঁচতে কিছু কার্যকরী পরামর্শ দেওয়া হলো:
১. মানসিক ব্যায়াম ও শিখার অভ্যাস
- নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করুন, যেমন নতুন ভাষা, বাদ্যযন্ত্র, পাজল বা দাবা খেলা।
- নিয়মিত পড়াশোনা ও নতুন বিষয় শিখলে মস্তিষ্কের স্নায়ুর সংযোগ বৃদ্ধি পায় এবং মস্তিষ্ক সচল থাকে।
- ক্রসওয়ার্ড পাজল, সুডোকু ইত্যাদি খেলা মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখে।
২. সুস্থ জীবনধারা
- পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ভালো ঘুম মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং মস্তিষ্কের কোষকে পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে।
- মানসিক চাপ কমানো: ধ্যান, যোগাসন বা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম মস্তিষ্ককে চাপমুক্ত রাখতে সহায়তা করে।
- ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন: এগুলো মস্তিষ্কের ক্ষতি করতে পারে এবং ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
৩. সঠিক খাদ্যাভ্যাস
- মেডিটারেনিয়ান ডায়েট (যেমন জলপাই তেল, মাছ, শাকসবজি, বাদাম, ফলমূল): এই খাবারের মধ্যে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন মস্তিষ্কের সুরক্ষায় সহায়ক।
- সবুজ শাকসবজি ও বীজজাতীয় খাবার: এগুলিতে থাকা ভিটামিন বি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ডিমেনশিয়া প্রতিরোধে কার্যকর হতে পারে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, কারণ ডায়াবেটিস থাকলে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
৪. শারীরিক ব্যায়াম
- নিয়মিত ব্যায়াম, যেমন হাঁটা, দৌড়ানো, সাইক্লিং বা সাঁতার কাটা: এটি মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি করে এবং স্নায়ুকে সচল রাখতে সাহায্য করে।
- শক্তি ও ভারোত্তলন ব্যায়ামও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কার্যকর।
৫. সামাজিক সম্পৃক্ততা
- পরিবার, বন্ধু ও সমাজের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখুন। নিয়মিত যোগাযোগ ও সামাজিক সম্পৃক্ততা মস্তিষ্কের সচলতা বৃদ্ধি করে।
- বিভিন্ন সামাজিক বা সাংস্কৃতিক কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করুন, যা মানসিক উৎকর্ষ ও মনোবল বাড়ায়।
youtube BD Glamour World
৬. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখা
- উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগ ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। নিয়মিত চেকআপের মাধ্যমে রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
- হার্ট ভালো রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখুন।
৭. প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গ্রহণ
- ফলমূল (বিশেষ করে বেরি জাতীয় ফল), সবুজ চা, এবং ডার্ক চকলেটের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মস্তিষ্কের কোষকে সুরক্ষা প্রদান করতে সহায়তা করে।
৮. ভিটামিন ডি ও বি কমপ্লেক্স সাপ্লিমেন্টস
- ভিটামিন ডি-এর অভাব মস্তিষ্কের রোগের জন্য সহায়ক হতে পারে, তাই রক্তের ভিটামিন ডি লেভেল নিয়মিত পরীক্ষা করুন।
- ভিটামিন বি-১২ এবং বি-৬ সমৃদ্ধ খাবার (যেমন ডিম, দুধ, মুরগি) গ্রহণ করতে পারেন, যা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
এই অভ্যাসগুলো মেনে চললে আলঝেইমার এবং ডিমেনশিয়া থেকে সুরক্ষিত থাকার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। তবে সঠিক পরীক্ষা ও পরামর্শের জন্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করাও গুরুত্বপূর্ণ।
হালকা ও স্বাস্থ্যকর পাঁচটি নাশতা সহজ রেসিপি
ওজন বশে রাখতে চান? রুটি-তরকারির বদলে প্রোটিন সমৃদ্ধ রোল খেতে পারেন
Tags
স্বাস্থ্য বিষয়