৬ ধরণের স্টাইলিশ মেহেদী ডিজাইন

 ৬ ধরণের স্টাইলিশ মেহেদী ডিজাইন 


মেহেদী প্রাচীনকাল থেকেই নারীর সৌন্দর্য এবং উৎসবের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। বিয়েবাড়ি, ঈদ, পূজা বা যেকোনো উৎসবে মেহেদী লাগানোর প্রচলন রয়েছে। মেহেদীর সৌন্দর্যকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করতে স্টাইলিশ এবং ক্রিয়েটিভ ডিজাইনগুলো হয়ে উঠেছে অত্যন্ত জনপ্রিয়।

এখনকার মেহেদী ডিজাইনগুলোতে আধুনিকতার ছোঁয়া থাকলেও এর মধ্যে ঐতিহ্যের ছাপও রয়েছে। মেহেদী ডিজাইন কেবল হাত বা পায়েই নয়, শাড়ির মতো শরীরের অন্য স্থানেও ব্যবহার করা হচ্ছে স্টাইলের অংশ হিসেবে। চলুন, কিছু স্টাইলিশ মেহেদী ডিজাইনের ট্রেন্ড ও তাদের বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করি।


১. অ্যারাবিক মেহেদী ডিজাইন



অ্যারাবিক মেহেদী ডিজাইন বিশ্বব্যাপী বেশ জনপ্রিয়। এর ডিজাইনগুলো সাধারণত বড় ফুল, লতা এবং সরল রেখার সমন্বয়ে তৈরি হয়। এই ডিজাইনে হাতে বা পায়ে অনেক জায়গা খালি রেখে শুধু নির্দিষ্ট অংশে মেহেদী লাগানো হয়। এতে ডিজাইনটা সুন্দরভাবে ফুটে ওঠে এবং খুব কম সময়েই করা সম্ভব।

বৈশিষ্ট্য:

  • সহজ এবং দ্রুত প্রয়োগযোগ্য
  • বড় বড় ফ্লোরাল মোটিফ এবং জ্যামিতিক আকারের সংমিশ্রণ
  • হাতে খালি জায়গা রেখে ডিজাইন করা হয়

২. ভারতীয় বা রাজস্থানি মেহেদী ডিজাইন


ভারতীয় এবং রাজস্থানি ডিজাইনগুলো সাধারণত খুবই ঘন এবং জটিল হয়। এই ডিজাইনগুলোতে বিভিন্ন রকমের ফুল, পাতা, ময়ূর, মন্দির বা চিত্রশিল্পের অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়। বিয়ে বা বড় অনুষ্ঠানগুলোর জন্য এটি আদর্শ ডিজাইন, কারণ এতে পুরো হাত বা পা ঢেকে দেওয়া হয়।

বৈশিষ্ট্য:

  • ঘন এবং জটিল নকশা
  • ফুল, ময়ূর, মন্দির ও বিভিন্ন চিত্রশিল্পের মিশ্রণ
  • দীর্ঘস্থায়ী এবং উৎসবমুখী

৩. আধুনিক মিনিমালিস্ট মেহেদী ডিজাইন



বর্তমান সময়ে মিনিমালিস্ট বা সরল ডিজাইনও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই ডিজাইনগুলোতে খুবই সূক্ষ্ম রেখা ও ছোট ছোট মোটিফ ব্যবহার করা হয়। যারা খুব ঘন মেহেদী ডিজাইন পছন্দ করেন না, তাদের জন্য এটি আদর্শ।

বৈশিষ্ট্য:

  • সরলতা এবং সূক্ষ্মতার সমন্বয়
  • লতা, ফুল, এবং ছোট জ্যামিতিক আকারের ব্যবহার
  • দ্রুত প্রয়োগযোগ্য এবং স্টাইলিশ

৪. মন্ডালা আর্ট মেহেদী ডিজাইন



মন্ডালা ডিজাইন মানেই হলো কেন্দ্র থেকে শুরু করে গোলাকার আকারে সমানভাবে বিস্তৃত হওয়া। এটি মনের শান্তি এবং ভারসাম্যের প্রতীক বলে মনে করা হয়। এই ডিজাইনগুলোতে হাতের মাঝখান থেকে শুরু করে আঙ্গুল পর্যন্ত বিস্তৃত নকশা করা হয়, যা দেখতে খুবই অনন্য এবং সুন্দর লাগে।

বৈশিষ্ট্য:

  • গোলাকার ও সুষম নকশা
  • মনের শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতীক
  • বিশেষত বিয়ের অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়

৫. গ্লিটার এবং স্টোন মেহেদী ডিজাইন



গ্লিটার এবং স্টোন ব্যবহার করে মেহেদী ডিজাইন এখন ট্রেন্ডি। বিশেষ করে ব্রাইডাল মেহেদীতে এই ধরনের ডিজাইন খুবই জনপ্রিয়। সাধারণ মেহেদী ডিজাইন শেষ হওয়ার পরে, বিভিন্ন রঙের গ্লিটার এবং ছোট স্টোন দিয়ে নকশাগুলোকে আরও উজ্জ্বল এবং চমকপ্রদ করা হয়।

বৈশিষ্ট্য:

  • রঙিন গ্লিটার এবং স্টোনের সংযোজন
  • ঝলমলে ও ব্রাইডাল লুকের জন্য আদর্শ
  • ফ্যাশনেবল এবং আধুনিক

৬. গোল্ড ও সিলভার মেহেদী ডিজাইন



মেহেদীতে এখন গোল্ড এবং সিলভার হাইলাইটও করা হচ্ছে। এই ডিজাইনগুলো বেশ আধুনিক এবং অভিনব। উৎসবে, বিশেষ করে বিয়ের অনুষ্ঠানে বা ফ্যাশন শোতে এই ধরণের মেহেদী ডিজাইন নজর কাড়ে। স্বাভাবিক মেহেদীর সাথে সোনালী বা রূপালি রঙের সংমিশ্রণ এটি আরও গ্ল্যামারাস করে তোলে।

বৈশিষ্ট্য:

  • সোনালী এবং রূপালি রঙের ব্যবহারে উজ্জ্বলতা
  • ব্রাইডাল ও পার্টি লুকের জন্য চমৎকার
  • অত্যাধুনিক এবং ট্রেন্ডি


মেহেদী ডিজাইন শুধুমাত্র সৌন্দর্য বৃদ্ধির একটি মাধ্যম নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশও। স্টাইলিশ মেহেদী ডিজাইনগুলো বর্তমানে ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চললেও, প্রতিটি ডিজাইনের মধ্যে ঐতিহ্যের ছোঁয়া রয়েছে। আপনি যদি উৎসবের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাহলে আজই আপনার প্রিয় ডিজাইনটি বেছে নিন এবং আপনার হাত বা পায়ে মেহেদীর নকশা ফুটিয়ে তুলুন।

আরো পড়ুন 



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন