ইসলামের চোখে পরিশ্রম ও বিশ্রামের গুরুত্ব 
পরিশ্রমের গুরুত্ব
১. রিজিকের জন্য পরিশ্রম: ইসলামে জীবিকা উপার্জনের জন্য পরিশ্রমকে ইবাদতের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কুরআনে আল্লাহ বলেন:
“মানুষের জন্য সে যা চেষ্টাকরে তাই আছে।” (সূরা নাজম, আয়াত ৩৯)।
অর্থাৎ, মানুষকে জীবিকা উপার্জনের জন্য চেষ্টা করতে হবে এবং আল্লাহ সেই প্রচেষ্টাকে পুরস্কৃত করবেন।
২. পরিশ্রমী মানুষকে আল্লাহ ভালোবাসেন:
ইসলাম শ্রমিক বা কর্মীদের সম্মান করতে উৎসাহিত করেছে এবং সৎ ও পরিশ্রমী মানুষকে আল্লাহর কাছে প্রিয় বলে উল্লেখ করেছে। নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন,
“যে ব্যক্তি সৎভাবে পরিশ্রম করে উপার্জন করে, আল্লাহ তাকে পছন্দ করেন।”
৩. দায়িত্বশীলতা: ইসলাম কাজের দায়িত্বশীলতার উপর গুরুত্ব দিয়েছে। ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে সবার জন্য কর্মক্ষম ও পরিশ্রমী হওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।
৪. সমাজ গঠনে ভূমিকা: পরিশ্রম ছাড়া মানুষ নিজেকে এবং সমাজকে উন্নত করতে পারে না। পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজের উন্নতি এবং সমাজের কল্যাণের জন্য ভূমিকা রাখা একটি পূণ্যময় কাজ হিসেবে বিবেচিত হয়।
বিশ্রামের গুরুত্ব
১. শরীর ও মনের বিশ্রামের প্রয়োজন: পরিশ্রমের পাশাপাশি শরীরেরও বিশ্রামের প্রয়োজন আছে। ইসলামে ঘুম এবং বিশ্রামকে প্রয়োজনীয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ বলেছেন:
“আর আমি তোমাদের ঘুমকে করেছি বিশ্রাম স্বরূপ।” (সূরা আন-নাবা, আয়াত ৯)
২. ইবাদত করার শক্তি পাওয়া: বিশ্রামের মাধ্যমে মানুষ নতুন উদ্যমে আল্লাহর ইবাদত করতে পারে এবং দায়িত্ব পালন করতে পারে। বিশ্রাম ছাড়া মানুষ তার দৈনন্দিন কাজগুলো সঠিকভাবে করতে অক্ষম হয়ে পড়ে, যা ইসলামের দৃষ্টিতে কাম্য নয়।
৩. পরিবারের সাথে সময় কাটানো: বিশ্রামের সময় পরিবারের সাথে সময় কাটানো এবং আত্মীয়স্বজনের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের একটি সুযোগ। ইসলামে পরিবারের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে বলা হয়েছে এবং বিশ্রাম সেই সুযোগ করে দেয়।
৪. ইসলামিক জীবনে ভারসাম্য:
ইসলাম ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাপনকে উৎসাহিত করে, যা পরিশ্রম ও বিশ্রামের সঠিক সংমিশ্রণে অর্জিত হয়। প্রয়োজনের অতিরিক্ত পরিশ্রমে শরীর ও মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে, যা ইসলামে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
পরিশ্রম ও বিশ্রামের গুরুত্ব তুলে ধরে ইসলাম এই শিক্ষা দেয় যে, উভয়ের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে চলাই একজন প্রকৃত মুসলিমের বৈশিষ্ট্য। ইসলামিক জীবনযাপনে পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবিকা উপার্জন এবং বিশ্রামের মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক শক্তি পুনরুদ্ধার করে আল্লাহর ইবাদত এবং দায়িত্ব পালন করাই হচ্ছে সঠিক পথ।